পেকুয়ায় ১৬ মাঝিমাল্লাসহ “এফবি আল আশফাক-২” ফিশিং বোট ৬ দিন ধরে নিখোঁজ

নিজস্ব প্রতিনিধি, পেকুয়া:

পেকুয়ায় ১৬ মাঝিমাল্লাসহ “এফ বি আল-আশফাক-২” নামের একটি ফিশিং বোট ৬দিন ধরে নিখোঁজ রয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। বর্ষার ঝড়– হওয়ার কারণে গত ২০ জুলাই ৩ নং সতর্ক সংকেতের সময় সাগরে প্রবল উত্তাল ঝড়ো হাওয়ার কবলে পড়ে ফিশিং বোটটি দুর্ঘটনা কবলিত হয়ে নিখোঁজ রয়েছে। আর এদিকে নিখোঁজ মাঝিমাল্লাদের পরিবার ও স্বজনদেও মাঝে চলছে শোকের মাতম। অসহায় দরিদ্র পরিবারের সদস্যদের গণআহাজারীতে এলাকার আকাশ ভারী হয়ে উঠেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানাযায়, উপজেলার রাজাখালী ইউনিয়নের জোবাইদ আহমদের মালিকনাধীন এফ বি আল-আশফাক-২ ফিশিং বোট যার লাইসেন্স নং-৫১৪৪, এস নং ৬৫৪০ টি কয়েক সপ্তাহ আগে পেকুয়া থেকে রশদপাতি নিয়ে সাগরে মাছ ধরতে যায়। প্রথম ট্রিপের মাছ নিয়ে তারা পটুয়াখালীর মহিপুরে বিক্রি শেষে গত ১৮ জুলাই তারা আবারো বঙ্গোপসাগরের সোনারচর পয়েন্টে মাছ ধরতে যায়। ২০ জুলাই হঠাৎ করেই ঝুড়– হাওয়া বিরাজ করায় ৩ নং স্থানীয় সতর্ক সংকেত জারি করে আবহাওয়া অধিদপ্তর। ওই সময়ে সাগর হঠাৎ করে উত্তাল হয়ে উঠে এবং প্রবল ঝড়ো হাওয়া শুরু হলে অনেকগুলো মাছ ধরার ট্রলার ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

সোনারচরের ঝড়ো হাওয়ার কবল থেকে ফিরে আসা বাঁশখালী উপজেলার এফ.বি আল্লাহর দান ফিশিং বোটের মাঝি নেজাম উদ্দিন ও এফ বি আবদুর রহিম ফিশিং বোটের মাঝি আমিন গতকাল এ প্রতিনিধিকে জানিয়েছেন, ২০ জুলাই হঠাৎ করে সাগরে ঝড়ো হাওয়া শুরু হলে সাগর উত্তাল হয়ে উঠে। এসময় এফ বি আল-আশফাক-২ ফিশিং বোটটি আমাদের আশেপাশে ছিল কিন্তু ঝড়ের পরে তাদের আর দেখা যায়নি। আমরা নিরাপদে চলে আসি।

নিখোঁজ মাঝিমাল্লাদের অধিকাংশই পেকুয়ার অধিবাসি। নিখোঁজ ১৬ জন মাঝিমাল্লার মধ্যে ১০ জনের বাড়ীর উপজেলার রাজাখালী ইউনিয়নের সুন্দরী পাড়া, ৪ জনের বাড়ী একই ইউনিয়নের বামুলা পাড়া, ১ জনের বাড়ী টইটং ইউনিয়নের ধইন্যাকাটা ও বাকী ১ জনের বাড়ী কুতুবদিয়া উপজেলায়। নিখোঁজ মাঝিমাল্লারা হলেন, মাঝি মাহবুব (৪৫), ম্যাট মাঝি জামাল হোসেন (৪০), ড্রাইবার রশিদ আহমদ (৩৫), নাছির উদ্দিন (৩৮), কপিল উদ্দিন (৩০), রিদুয়ান বাবুর্চি (৪০), ফিরোজ (২৭), জামাল (৩৭), শাহাব উদ্দিন-১ (৪০), বাবুল (৪১), শাহাব উদ্দিন-২ (৩৮), বধ (২৫), আলমগীর (২২), নেজাম উদ্দিন (৩০), শফিউল আলম (৩২), কাউচার (২৬) প্রমূখ।

এ ব্যাপারে এফ বি আল-আশফাক-২ ফিশিং বোটের মালিক মৌলভী জোবাইরের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আমার বেশ কয়েকটি ফিশিং বোট একই সময়ে সাগরে মাছ ধরতে গিয়ে বাকীগুলো ফিরে এলেও আল-আশফাক-২ বোটটির কোন খোঁজ পাওয়া যাচ্ছেনা। ঝড়ের পর থেকেই মাঝি ও বোটের স্টাফদের সবার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। এ বিষয়ে প্রশাসনকে কিছু জানানো হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, অনেকসময় একমাস পরেও নিখোঁজ হওয়া বোট ফিরে আসে সেজন্য আল্লাহর দরবারে প্রার্থনা করছি এবং অপেক্ষা করছি। অন্যথায় প্রশাসনকে বিষয়টি অবহিত করে নিখোঁজ মাঝিমাল্লাদের পরিবারের পুনর্বাসনের চেষ্ঠা করব।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন