লামায় গরুর সাথে পাচার হয়ে আসছে অস্ত্র ও মাদক

fec-image
লামা উপজেলার প্রধান দুইটি সড়ক রাত হলেই চলে যায় চোরাকারবারী মাদক ও অস্ত্র পাচারকারীদের দখলে। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর চোখকে ফাঁকি দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে আলীকদম-চকরিয়া ভায়া লামা এবং লামা-ফাইতং সড়ক দিয়ে মায়ানমার থেকে অবৈধভাবে আসা গরু ও মাদক পাচার হয়ে আসছে।
গরু পাচারের নামে মূলত মাদক ও অস্ত্র পাচারের মত জঘন্য অপরাধ সংগঠিত হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বিজিবি, পুলিশ ও অন্যান্য আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে মাঝে মধ্যে চোরাইভাবে আসা কিছু গরু জব্দ হলেও চোরাকারবার এবং মাদক ও অস্ত্র পাচার বন্ধ হয়নি।
জানা গেছে, মাদক ও চোরাচালান কাজকে সহজ করার জন্য লামায় গড়ে উঠেছে একটি ১২ সদস্যের সিন্ডিকেট। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কিছু সদস্যের সাথে এই চোরাকারবার সিন্ডিকেটের বিশেষ সখ্যতায় রাত হলেই লামার সড়ক গুলোতে নেমে আসে পাচারকারীদের মহড়া। আলীকদম উপজেলার বিভিন্ন জায়গাতে জড়ো করে রাখা এই সকল অবৈধ গরু পিকআপ ও ট্রাক যোগে পাচার করার সময় সামনে পিছনে মোটর সাইকেল মহড়া দিয়ে সিন্ডিকেট সদস্যগণ পাচার করেন।
গরু পাচারের সময় আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর চেক পোষ্টগুলো বিশেষ কারণে সতর্ক মনিটরিং না করায় অস্ত্র ও মাদক পাচার কাজে সহজ হচ্ছে বলে জানা গেছে। পাচারকারীরা চেকপোষ্ট গুলোতে বিশেষ সুবিধা পাওয়ার অভিযোগ বিভিন্ন মহলের। ইতিপূর্বে এই সড়ক দিয়ে মাদক পাচারের বড় বড় চালান আটক হয়েছিল।
মায়ানমার থেকে আলীকদম সীমান্ত দিয়ে পাচার হয়ে আসা এই সকল গরুর একটি বিরাট অংশ লামা উপজেলার বিভিন্ন সড়ক দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে পাচার হয়ে আসছে। অভিযোগ উঠেছে চেক পোষ্ট গুলোর দূর্বল মনিটরিং এর কারণে গরু পাচারের আড়ালে মাদক ও অস্ত্র পাচার করা হচ্ছে। দিনের বেলায় সর্বসাধারণের চোখকে ফাঁকি দিয়ে গভীর রাতে সড়ক গুলো দিয়ে নিরাপদে চোরাই সিন্ডিকেট এর সদস্যগণ গাড়ীর সামনে পিছনে মহড়া দিয়ে পাচার কাজ অব্যাহত রেখেছে। বান্দরবান জেলা ও লামা উপজেলার আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভায় চোরাচালান ও মাদক পাচাররোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার গুরুত্বআরোপ করা হলেও পাচারকারীরা থেমে থাকেনি।
বর্ডার গার্ড আলীকদম উপজেলায় এবং লামা থানার পুলিশ লামা উপজেলায় চোরাচালান সিন্ডিকেটের কয়েকজন সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করলেও চোরাচালানের মূল হোতারা ধরা ছোঁয়ার বাহিরে রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। উঠতি বয়সের স্কুল কলেজের শিক্ষার্থী এবং বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের অনেকে চোরাকারবারী ও মাদক পাচারের সাথে জড়িত হয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
লামা উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তাফা জামাল জানিয়েছেন, চোরাচালান এবং মাদক ও অস্ত্র পাচার বন্ধ করা না হলে লামায় সামাজিক অবক্ষয় দেখা দিবে। উঠতি বয়সী কিশোর ও যুবকসহ যেকোন ধরণের মানুষ অপরাধমূলক কর্মকান্ডের সাথে যাতে করে জড়িত হতে না পারে সেই বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন।
লামা থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম চৌধুরী জানান, মাদক ও চোরাকারবারীদের বিরুদ্ধে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে। অনেক চোরাকারবারীর বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা রুজু করা হয়েছে। পাচারের সময় অনেক গরু জব্দ করে আদালতে চালান দেওয়া হয়েছে।
Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: অস্ত্র, গরু, পাচার
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন