লামা আলীকদমে বন বিভাগের সহায়তায় রাজস্ব ফাঁকির অভিযোগ
নিজস্ব প্রতিনিধি:
বান্দরবানের লামা আলীকদম উপজেলায় বন বিভাগের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় দীর্ঘদিন যাবত সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগ করেছেন স্থানীয় সচেতন মহল।
অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বনজ সম্পদ উলুফুল (ফুলের ঝাড়ু) স্থানীয় নাম বাটারী, লামা আলীকদমের বনভূমিতে প্রাকৃতিকভাবে উৎপন্ন হয়, স্থানীয় ব্যবসায়ী ও ঢাকা, চট্রগ্রামের ব্যবসায়ীরা প্রতিবছর আগস্ট হতে নভেম্বর মাস পর্যন্ত ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষের কাছ থেকে প্রতি হাজার, কাঠি হিসাবে ২ শত টাকা হতে ৩ শত টাকায় সংগ্রহ করেন।
তাদের সংগৃহী বাটারী লামা আলীকদমের বিভিন্ন স্থানে প্রক্রিয়া জাত করে বন বিভাগের কাছে রাজস্ব পরিশোধ করে পরিবহনের অনুমতি পত্র গ্রহণ করতে হয়। আর বন বিভাগের কাছে গেলেই সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়।
সরকারি নিয়ম মোতাবেক প্রতি ট্রাকে ৩০ হাজার ভ্রুম, প্রতি পিচ ঝাড়ু তৈরি করে প্রতিটি ০.৩০ পয়সা করে ৯ হাজার টাকা রাজস্ব পরিশোধ করে পরিবহনের অনুমতি প্রদানের কথা থাকলেও সরেজমিনে দেখা যায়, বন বিভাগের লোকজনের উপস্থিতিতে প্রতিটি ট্রাকে ১ লক্ষ ভ্রুম বা তার বেশি পরিমাণ উলুফুল বোঝাই করে রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে অতিরিক্ত টাকা আদায় করে তা বন বিভাগের লোকজন আত্বসাৎ করে।
সেই হিসাবে প্রতি বছর কমপক্ষে ১৫০ ট্রাক উলুফুলে ১৮ হাজার টাকা করে ২৭ লক্ষ টাকার রাজস্ব হতে সরকার বঞ্চিত হয় বন বিভাগের লোকজনের দুর্নীতির কারণে।
অপরদিকে অতিরিক্ত লোড করার কারণে পাহাড়ি রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে দুর্ঘটনার ঝুঁকিও বাড়ছে, গত কয়েক মাসে অতিরিক্ত উলুফুল বোঝাই ট্রাক চলাচলের কারণে লামা চকরিয়া সড়কের বেইলি ব্রিজটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পাটাতন ভেঙ্গে যায়। বর্তমানে ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চলাচল করছে।
নিয়ম বহির্ভূতভাবে রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে উলুফুল পাচারেব কারণে পৌর এলাকার লাইন ঝিরি টোল টেক্স আদায় পয়েন্টে প্রতিটি ট্রাক হতে নামে বেনামে ৫শত টাকা হতে ১ হাজার পর্যন্ত চাঁদা আদায় করা হয়। নাম প্রকাশ না করা শর্তে হরিন ঝিরি এলাকার এক শ্রমিক জানান, আমরা বন বিভাগের লোকজনের উপস্থিতিতে প্রতি ট্রাকে প্রায় ১ লক্ষ ভ্রুম উলুফুল লোড করে থাকি।
এ ব্যাপারে লামা উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান আবু তাহের মিয়া বলেন, অনিয়মের মাধ্যমে উলুফুল পাচারের কারণে প্রতিবছর সরকার লাখ লাখ টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে, অপরদিকে দুর্নীতিবাজরা অনিয়মের মাধ্যমে অর্থ আয় করছে।
এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চাইলে লামা বিভাগীয় বন কর্মকর্তা কামাল আহমেদ চৌধুরী বলেন, আমি খবর নিয়ে এ ব্যাপারে অতিদ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করব।