সাতদিনের মধ্যে গুলিবর্ষণকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি
কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) সশস্ত্র সদস্য কর্তৃক সাধারণ মানুষকে গুলি করার অভিযোগে বান্দরবানের রুমায় মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে রুমা সচেতন নাগরিক সমাজ। এ বিক্ষোভের এক পর্যায়ে বেশ কয়েকটি বসতঘরে ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে।
বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১১টায় রুমা সচেতন নাগরিক সমাজের ব্যানারে এ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। রুমা বাজারে হাসপাতাল সেতু সংলগ্ন এলাকায় সকাল সোয়া ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত মানবন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ চলে।
উপজেলা চেয়ারম্যান উহ্লাচিং মারমা সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন রুমা সদর ইউপি চেয়ারম্যান ও রুমা আওয়ামীগের সভাপতি শৈমং মারমা শৈবং, ত্রিপুরা কল্যাণ সংসদের সভাপতি অনীল চন্দ্র ত্রিপুরা, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নুম্রাউ মারমা, পাইন্দু ইউপি চেয়ারম্যান উহ্লামং মারমা, বড়থলি ইউপি চেয়ারম্যান আতোমং মারমা ও মারমা ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের সভাপতি উথোয়াইচিং মারমা।
বক্তব্যে রুমা সদর ইউপি চেয়ারম্যান শৈমং বলেন, শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নিরীহ মানুষকে গুলি বর্ষণকারী সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে এই মানববন্ধন। তারই অংশ হিসেবে গুলিবর্ষণকারী সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আইনগত প্রক্রিয়ায় মামলা করা হবে। এসময় সমাবেশে আগত ও বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীদের কোনো প্রকার বিশৃঙ্খলা না করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
তবে এদিকে হাসপাতাল সংলগ্ন এলাকায় বিক্ষোভ সমাবেশ চলছিল আর অন্যদিকেবিক্ষোভকারীরা কুকি-চিনের আস্তানা পুড়িয়ে দাও, জ্বালিয়ে দাও, নিরীহ লোকজনকে গুলি কেন- প্রশাসনের জবাব চাই, এই স্লোগানে উত্তেজিত হয়ে পড়ে। পরে বিক্ষোভকারীরা মিছিল করে উপজেলা পরিষদে অগ্রসর হতে থাকে। এসময় ভাংচুরের ঘটনা ঘটে।
এসময় উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান থাংখামলিয়ান বমের বাড়িসহ ও বাউন্ডারি বেড়া ভেঙ্গে দিয়ে চুর-মার করে। একই সাথে বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল ভাংচুরের ঘটনা ঘটে।
রুমা আওয়ামীলীগের সভাপতি শৈমং মারমা বলেন, মানববন্ধন শেষে সমাবেশে আসা সাধারণ লোকজন নিজ নিজ বাড়ি ফিরছিল। ফেরার পথে লাইরুনপি পাড়ার এলাকায় পৌঁছলে ক্যসিংমং নামে একজনকে আটক করে সন্ত্রাসীরা। এ খবর ছড়িয়ে পরলে মানুষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়।উত্তেজনার সময়ে এ অনাকাঙ্খিত ভাংচুরের ঘটনা সংঘটিত হয়ে থাকতে পারে। তবে এটা মীমাংসাযোগ্য বলে মনে করেন চেয়ারম্যান শৈমং মারমা।
প্রসঙ্গত; গত মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) ভোরে পাড়ায় প্রবেশ করে রুমা সদর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের রিজুক পাড়ায় কোনো কারণ ছাড়া এক ব্যক্তিকে গুলি করে সন্ত্রাসীরা। তাকে মুর্মূষ অবস্থায় রুমা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। এসময় সন্ত্রাসীরা পাড়ার সব পরিবারে তল্লাশি চালিয়ে নগদ অর্থ ও সোনা গয়না লুট করে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ করে পাড়াবাসী।
এর আগে নিয়াংক্ষ্যং পাড়া, পড়ুয়া পাড়া, সেঙ্গুম পাড়া, চাইরাগ্র পাড়া, থোয়াইম্ব পাড়াসহ রুমাখালের বেশ কয়েকটি পাড়ার মারমা সম্প্রদায়ের লোকজনকে পিটিয়ে জখম করে সন্ত্রাসীরা। তার সাথে কুকুরসহ পশু প্রাণী নিয়ে যেত। এতে মারমা সম্প্রদায়ের লোকজন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিল।