লামায় কলেজছাত্রী ম্যাহ্লাউর মৃত্যু নিয়ে কি ভাবছে পুলিশ?
লামা প্রতিনিধি:
লামার ফাঁসিয়াখালীতে মার্মা কলেজছাত্রী ম্যাহ্লাউ মার্মার মৃত্যুর ঘটনায় কোন ক্লু খুঁজে পাচ্ছে না পুলিশ। একাধিক বিষয় সামনে রেখে মৃত্যুর ঘটনার রহস্য উদঘাটনের জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে।
তবে মেডিকেল রিপোর্টে কলেজ ছাত্রীকে ধর্ষণের আলামত পেয়েছে বলে জানিয়েছেন বান্দরবান সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল চিকিৎসক ডাঃ চিংম্রা সাং মারমা।
মৃত্যুর ঘটনায় ম্যাহ্লাউ মার্মার মা বাদী হয়ে গেল মঙ্গলবার লামা থানায় অজ্ঞাতনামা আসামী দিয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলার তদন্তের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক আব্দুল্লাহ আল বাকী জানান, এখনও পর্যন্ত তদন্তের কোন অগ্রগতি হয়নি।
গত ১৭ জুন ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের অংহ্লারী উক্যাচিং কারবারী পাড়ায় ম্যাহ্লাউ মার্মা (১৯) নামক এক মার্মা তরুণীর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে।
লামা থানার অফিসার ইনচার্জ অপ্পেলা রাজু নাহা পার্বত্যনিউজকে জানান, এই মামলাটি অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্তে সন্দেহের সকল বিষয়গুলোকে সামনে রাখা হচ্ছে।
নিহতের মা মামুইয়ই মার্মা (৪০) থানায় দায়েরকৃত এজাহারে জানিয়েছেন, রাতে খাওয়া দাওয়া করে ম্যাহ্লাউ মার্মা ও তার পিতা ক্রা হ্লা অং মার্মা একই ঘরে পাশাপাশি রুমে ঘুমিয়ে পড়ে। সকালে ঘুম থেকে উঠে তার পিতা দেখেন মেয়ের শরীর এবং মুখ কম্বল দিয়ে ঢাকা অবস্থায় রয়েছে। দাত দিয়ে জিহ্বা কামড়ানো। তার কানের দুল, গলার চেইন ও ব্যবহৃত অলংকার নাই। জানালা দিয়ে কে বা কাহারা এসে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে।
অংহ্লারী উক্যাচিং কারবারী পাড়ার কয়েকজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, মেয়েটির সঙ্গে সম্পর্ক করা নিয়ে পাড়ার একাধিক যুবকের দ্বন্দ ছিল।
আবার ঘরের মধ্যে প্রবেশ করে হত্যাকাণ্ড ঘটানোর পরও পাশের রুমে অবস্থান করে কোন কিছু না জানার ঘটনায় সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছে।
হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে পরিবারের কোন লোক জড়িত আছে কিনা এই বিষয়টাও মাথায় রেখেছে পুলিশ।
পাড়ার লোকজন অজ্ঞাত কারণে মুখ খুলছে না ও পুলিশকে কোন ধরণের সহযোগিতা করছে না।
এদিকে প্রথমে নিহতের পিতা মামলা করতে এবং মরদেহ ময়না তদন্ত করতে দিতে রাজি হয়নি। পুলিশ চাপ দিয়ে ময়না তদন্তের জন্য মরদেহ বান্দরবান সদর হাসপাতালে প্রেরণ করে। ময়না তদন্ত শেষে মরদেহের সৎকার করা হয়েছে। এই সকল বিষয়গুলোকে সামনে রেখে চুলচেরা বিশ্লেষণ করে তদন্তের গন্তব্য ঠিক করা হচ্ছে।
তদন্ত কর্মকর্তা ছাড়াও মামলার তদন্তে সহায়তার জন্য একটি টিম গঠন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন অফিসার ইনচার্জ অপ্পেলা রাজু নাহা।