মাহিন্দ্র ছিনতাইয়ের উদ্দ্যেশে খুন করা হয় মহালছড়ির ফারুককে

fec-image

মাহিন্দ্র ছিনতাইয়ের উদ্দ্যেশ্যেই খুন করা হয়েছে খাগড়াছড়ির মহালছড়ির ভাড়ায় চালিত মাহিন্দ্র চালক মো. ফারুক হোসেনকে। ঘটনার পাঁচ দিনের মাথায় পুলিশের হাতে আটকের পর এমনটাই জানিয়েছে হত্যাকাণ্ডের মুল পরিকল্পনাকারী মো. মাসুম (২৮)।

খাগড়াছড়িতে চাঞ্চল্যকর মাহিন্দ্র চালক ফারুক হত্যাকাণ্ডের পাঁচ দিনের মাথায় ৬ ফেব্রুয়ারি সকালের দিকে রাঙ্গামাটির লঙগদু থেকে হত্যাকাণ্ডের মুল পরিকল্পনাকারী মো. মাসুমকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেফতারকৃত মাসুম রাঙ্গামাটির লঙগদু উপজেলার ইয়াংছড়ির মো. আবদুস ছাত্তারের ছেলে। পরে তার দেয়া তথ্যমতে চট্টগ্রামের ইপিজেড এলাকা থেকে আটক করা হয় মো. হামিদুল ইসলাম ওরফে সাইদুল ও ফরিদ হোসেনকে। একই সাথে ছিনতাই হওয়া মাহিন্দ্রটি উদ্ধার করে পুলিশ।

এদিকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে মো. মাসুম, মো. হামিদুল ইসলাম ও ফরিদ হোসেনকে আদালতে সোপর্দ করা হলে আদালত তাদেরকে কারাগারে প্রেরণ করে।

এদিকে হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে হত্যাকাণ্ডের মুল পরিকল্পনাকারী মো. মাসুম খাগড়াছড়ির জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. সামিউল আলমের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দিয়েছে জানিয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও মাটিরাঙ্গা থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) মো. শাহনুর আলম বলেন, আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিনের রিমাণ্ড আবেদন করা হয়েছে।

আসামীদের জবানবন্দীর সূত্র ধরে পুলিশ জানায়, মাহিন্দ্র ছিনতাইয়ের উদ্দ্যেশে রাঙ্গামাটির লংগদুর বাসিন্দা মো. মাসুম, রাঙ্গামাটির লঙগদু উপজেলার করল্যাছড়ির বাসিন্দা মো. আবু মুছা এবং তার স্ত্রী শাহনাজ আক্তার ১ ফেব্রুয়ারি ফারুকের মাহেন্দ্রটি রিজার্ভ করে খাগড়াছড়ির বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রে ঘুরে বেড়ায়। ঘটনার দিন (১ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্র ঘুরে মানিকছড়ি নামিয়ে দিয়ে আসার কথা ছিল। মানিকছড়ি যাওয়ার পথে মাটিরাঙ্গার অদুরে ১০ নম্বর এলাকায় আসলে প্রস্রাব করার কথা বলে মাহিন্দ্র থামায়। মাহিন্দ্র থামানোর পর তারা শ্বাসরোধ করে ফারুককে হত্যা করে মাহিন্দ্র নিয়ে পালিয়ে যায়। পরে তাদের পুর্বপরিচিত গ্যারেজ মেকানিক মো. শাকিলের মাধ্যমে চট্টগ্রামের ইপিজেড এলাকার মো. হামিদুল ইসলাম ওরফে সাইদুল ও ফরিদ হোসেনের কাছে এক লক্ষ টাকায় বিক্রি করে।

মাটিরাঙ্গা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শামসুদ্দিন ভুইয়া জানান, খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের দিকনির্দেশনায় তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার ও নিজস্ব গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে রাঙ্গামাটির লঙগদু ও চট্টগ্রামের ইপিজেড এলাকা থেকে আসামীদের গ্রেফতারসহ মাহিন্দ্রটি উদ্ধার করা হয়। হত্যাকাণ্ডের সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত রাঙ্গামাটির লঙগদু উপজেলার করল্যাছড়ির বাসিন্দা মো. আবু মুছা এবং তার স্ত্রী শাহনাজ আক্তারকে গ্রেফতারে পুলিশী অভিযান অব্যাহত আছে বলেও জানান তিনি।

প্রসঙ্গত, গত ১ ফেব্রুয়ারি খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গার অদুরে ১০ নম্বর এলাকায় মো. ফারুক (২০) নামে এক মাহিন্দ্র চালককে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। ঘটনার একদিন পর রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে মাটিরাঙ্গার অদুরে খাগড়াছড়ি-ঢাকা আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে ১০ নম্বর এলাকায় ধলিয়া খালের গভীর ঢালু থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহতের বড় ভাই মো. আমজাদ হোসেন বাদী হয়ে মাটিরাঙ্গা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে।

নিহত মো. ফারুক খাগড়াছড়ির মহালছড়ি উপজেলার চোংড়াছড়ি এলাকার মৃত শাহ আলমের ছেলে। সে পেশায় একজন ভাড়ায় চালিত মাহিন্দ্র চালক। নিহত ফারুক এক সন্তানের জনক।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: খুন, মহালছড়ি
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন