গাজায় ইসরাইলের দ্বিতীয় দফা যুদ্ধ শুরু, কারণ বিশ্লেষণ

fec-image

গত কয়েকদিনে ইহুদিবাদী ইসরাইল দক্ষিণ গাজায় হামলা বাড়িয়ে দিয়েছে বিশেষ করে খান ইউনূসে আক্রমণ শুরু করেছে। বেশ কিছু কারণে ইসরাইল ৭ দিনের যুদ্ধবিরতি শেষ হবার পর গত শুক্রবার থেকে গাজার বিরুদ্ধে দ্বিতীয় দফা যুদ্ধ শুরু করে।

প্রথম কারণ হলো: যুদ্ধের প্রথম পর্বে ইহুদিবাদীরা ভেবেছিল গাজার দক্ষিণাঞ্চলে স্থল অভিযান তাদের জন্য নিরাপদই হবে। সেইসঙ্গে তাদের অভিযানের কথা শুনে ভয়ে ওই এলাকার লোকজন পালিয়ে যাবে। কিন্তু তারা যখন দেখলো উত্তর গাজাতেই লক্ষ্য অর্জনে চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে সে কারণে দক্ষিণ গাজার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকার দিকে যুদ্ধ বিস্তৃত করেছে।

দ্বিতীয় কারণ হলো, ইহুদিবাদীরা তাদের গণমাধ্যমগুলোতে বেশ কিছু তথ্য প্রকাশ করে দাবি করেছে যে, হামাসের বেশিরভাগ নেতাই গাজা উপত্যকার দক্ষিণে অবস্থান করছে। সে কারণেই তারা যুদ্ধের দ্বিতীয় পর্বে হামাস নেতাদের হত্যা করার টার্গেট নিয়ে ওই এলাকায় হামলা বৃদ্ধি করেছে। তারা যুদ্ধের এই কৌশল অবলম্বন করে টার্গেটে পৌঁছতে চায় বলেও জানিয়েছে। এরই ভিত্তিতে গাজার বিরুদ্ধে যুদ্ধে তাদের পরিকল্পনা পরিবর্তন করেছে এবং ওই উপত্যকার দক্ষিণে উন্মাদের মতো নির্বিচার আক্রমণ শুরু করেছে। ইহুদিবাদী শাসকগোষ্ঠীর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্যই এখন খান ইউনূস শহর দখল করা; যে শহরটির পরতে পরতে জড়িয়ে আছে হামাস এবং কাসসাম ব্রিগেডের নাম। গত শুক্রবার থেকে এ কারণেই তারা খান ইউনূসে তীব্র বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। এই বিষয়ে ইউনিসেফের মুখপাত্র বলেছেন: দক্ষিণ গাজায় মারাত্মক বোমাবর্ষণ করে যাচ্ছে ইসরাইল। তাদের হামলায় শিশুদের মাঝে ব্যাপক হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। দক্ষিণ গাজার দৃশ্যপট আশ-শিফা হাসপাতালের দৃশ্যপটের মতোই। শিফা হাসপাতালে হামলার কারণ হিসেবে ইহুদিবাদীরা বলেছিল: হামাসের কমান্ড সেন্টার এই হাসপাতালের নীচে রয়েছে। কিন্তু ওই হাসপাতাল দখল করে তারা বুঝতে পেরেছিল যে তাদের কাছে ভুল তথ্য ছিল এবং সেই অভিযান চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে। এখনও ঘোষণা করেছে: হামাস নেতারা গাজার দক্ষিণে অবস্থান করছে যদিও আগের মতোই তারা তাদের দাবির পক্ষে কোনো প্রমাণ দেয় নি।

তৃতীয় কারণ হলো, ইহুদিবাদীরা গাজায় জানমালের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করে, বোমা হামলা চালিয়ে এবং প্রতিরোধের খরচ বাড়িয়ে গাজাবাসীকে হামাসের বিরুদ্ধে বিক্ষুব্ধ করে তুলতে চায়। মানবিক বিপর্যয়ের মাধ্যমে সামাজিক চাপ সৃষ্টি করে গাজার জনগণের ওপর হামাস-বিরোধী প্রভাব ফেলতে চায়। গাজার বিরুদ্ধে পুনরায় যুদ্ধ ঘোষণা করে তারা হামাসকে এই বার্তা দিতে চায় যে তারা যদি ইহুদিবাদী বন্দিদের মুক্তি দিতে সম্মত না হয় তাহলে গাজার দক্ষিণাঞ্চলে আরও ব্যাপক হামলা চালানো হবে।

চতুর্থ কারণটি হলো ইসরায়েল দক্ষিণ গাজার জনগণকে মিশরে স্থানান্তর করতে চায়। এটা যুদ্ধের শুরু থেকেই ইহুদিবাদী ইসরাইলের অন্যতম একটা কৌশল ছিল।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: ইসরাইল, গাঁজা, যুদ্ধ
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন