টেকনাফে বিএনপি-আ.লীগের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া; দুইটি গাড়ি ভাঙচুর, আহত ১৭

fec-image

কক্সবাজারের টেকনাফে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির কর্মসূচি নিয়ে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয়পক্ষে অন্তত ১৭ জন আহত হয়েছে। আহতদের জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় হ্নীলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও ইউপির চেয়ারম্যানে রাশেদ মাহমুদ আলী পাজেরো গাড়িটি ও হ্নীলা দক্ষিণ বিএনপির সভাপতি নুরুল আমিন চৌধুরীর গাড়ি (নোহা) ভাংচুর করা হয়েছে।

শনিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) বেলা সাড়ে ৫টার দিকে উপজেলার হ্নীলা বাজারে এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় হ্নীলা বাজার এলাকায় তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ সভা করেছে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ। সমাবেশে হামলার ঘটনায় প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য রাখেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল বশর, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা এইচএম ইউনুছ বাঙালি, জেলা যুবলীগের সভাপতি সোহেল আহমদ বাহাদুর, হ্নীলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী প্রমুখ। আহতদের মধ্যে হ্নীলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি সদস্য আবুল হোসেন, আওয়ামী লীগ নেতা নুরুল ইসলাম, মাইন উদ্দিন, মোহাম্মদ সেলিম, মো. আনোয়ার, কবির আহমদসহ ১০ জন আহত হলেও বাকিদের নাম পাওয়া যায়নি।

এছাড়া বিএনপির আহতদের মধ্যে হ্নীলা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আলী আহমদ, মোহাম্মদ এমরান, আব্দুল্লাহ, মো. ইলিয়াছ, মো. জামাল ও আব্দুর রহিমসহ সাতজন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে।

স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল বশরের নেতৃত্বে পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী হ্নীলা বাজারের দক্ষিণ পাশ থেকে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা শান্তিপূর্ণ সমাবেশ শুরু করা হয়।

অপরদিকে, বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে ইউনিয়নের পযাপ্তে পথযাত্রা শুরু করে বিএনপি। কিছুক্ষণের মধ্যে মুখোমুখি হয়। হামলায় আওয়ামী লীগের ১০ জন নেতাকর্মীসহ অন্তত ১৭ জন আহত হয়েছে বলে দাবি করেছেন।

আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী কর্মীরা জানান, দিন দুপুরে পুর্ব পরিকল্পিত হামলা, ইট-পাটকেল ও গুলিবর্ষণ করে ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করে বিএনপির নেতাকর্মীরা। তাদের হামলায় হ্নীলায় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসেনসহ ১০ জন গুরুতর আহত হয়েছে।

হ্নীলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউপির চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী জানান, জেলা বিএনপির সভাপতি মো. শাহাজাহান চৌধুরীর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে হামলা ও গুলি চালানো হয়েছে। এতে ১০ জন নেতাকর্মী আহত হন। বিএনপির সন্ত্রাসীদের হামলায় আমার ব্যবহৃত ব্যক্তিগত পাজারো গাড়িটি ভাংচুর করা হয়েছে।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল বশর জানান, পূর্বনির্ধারিত শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি শান্তি সমাবেশে হামলা চালিয়ে গুরুতর আহত করে স্থানীয় সন্ত্রাসী হিসেবে আবারও প্রমাণ করেছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি।

উপজেলা বিএনপির সভাপতি এডভোকেট হাসান ছিদ্দিকী বলেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় ঘোষিত কর্মসূচিতে শান্তিপূর্ণ পদযাত্রায় জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক সাংসদ শাহজাহান চৌধুরীর উপস্থিত থাকাকালীন হ্নীলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি রাশেদ চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে প্রকাশ্যে লাঠিসোটা, ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। বিএনপি নেতা নুরুল আমিন চৌধুরীর পার্কিং থাকা নোহা মাইক্রোবাসটি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ভাংচুর করে তছনছ করে ফেলেছেন।

কক্সবাজার জেলা বিএনপি সভাপতি ও সাবেক সাংসদ মো. শাহাজাহান চৌধুরী জানান, কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে শান্তিপূর্ণ সমাবেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ইটপাটকেল ও লাঠিসোটা নিয়ে হামলা চালিয়ে বিএনপির ৭ জন নেতাকর্মীকে আহত করেছেন। এসময় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা হ্নীলা দক্ষিণ বিএনপির সভাপতি নুরুল আমিন চৌধুরীর গাড়ি (নোহা) ভাংচুর করে।

টেকনাফ মডেল থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি আব্দুল হালিম বলেন, আওয়ামী লীগ-বিএনপি উভয় দলের সংঘর্ষ কয়েকজন আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে ঘটনাস্থলে এখনো পুলিশ রয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: আ. লীগ, আওয়ামী লীগ, টেকনাফ
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন