পার্বত্যাঞ্চলে সেনাক্যাম্প পুনঃস্থাপনপূর্বক চিরুণী অভিযানের দাবি

প্রেস বিজ্ঞপ্তি:

‘বাংলাদেশ সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির মাধ্যমে অতিরিক্তভোগী উপজাতীয়রা, উপজাতীয় ক্ষমতায়নে বলীয়ান হয়ে চাঁদাবাজি, অপহরণ, গুম, খুন, ধর্ষণের মাধ্যমে পার্বত্যাঞ্চলকে সন্ত্রাসের রাজত্বে পরিণত করে পার্বত্য বাঙালীদের উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালাচ্ছে’- উল্লেখ করে পার্বত্যাঞ্চলে সেনাক্যাম্প পুনঃস্থাপনপূর্বক চিরুণী অভিযানের দাবি জানিয়েছে পার্বত্য গণ শ্রমিক পরিষদ।

রবিবার সকাল ৯ টায় রাঙামাটি পার্বত্য গণ শ্রমিক পরিষদের অস্থায়ী কার্যালয়ে “পার্বত্যাঞ্চলে উপজাতীয় সন্ত্রাস বৃদ্ধিতে পার্বত্য বাঙালীদের আন্দোলনের প্রয়োজনীয়তা” শীর্ষক এক আলোচনা সভায় বক্তারা এই দাবি করেন।

রাঙামাটি পার্বত্য গণ শ্রমিক পরিষদের জেলা আহবায়ক মোঃ রাসেল-এর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন শ্রমিক নেতা আব্দুল খালেক, প্রদিপ দেব নাথ, আলী হোসাইন মেহেদী, মোঃ জহির আহমদ প্রমূখ। সভা পরিচালনা করেন সংগঠনের জেলা সাধারণ সম্পাদক দিলিপ নাথ।

সভায় বক্তারা বলেন, ‘২ ডিসেম্বর ১৯৯৭ ইং সনে পার্বত্য শান্তি চুক্তি নামক কালো চুক্তির মাধ্যমে ১৯০০ সালের হিলট্র্যাক্টস ম্যানুয়েল বহাল, পার্বত্যাঞ্চলকে উপজাতীয় অধ্যুষিত অঞ্চল হিসাবে স্বীকৃতি, উপজাতীয় ক্ষমতায়ন, সকল ক্ষেত্রে উপজাতীয়দেরকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সুযোগ সুবিধা প্রদান, পার্বত্যাঞ্চল থেকে সেনাক্যাম্প প্রত্যাহার, পার্বত্যাঞ্চলে মোট জনগোষ্ঠির ৫১% বাঙালীদেরকে সাংবিধানিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা রাষ্ট্র ও পার্বত্য বাঙালীদের জন্য এক মহাপ্রলয়।’

বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, ‘পার্বত্যাঞ্চলের বাঙালীরা এখন উপজাতীয় সন্ত্রাসীদের হাতে জিম্মি। পার্বত্য বাঙালীদের বিচারের বাণী নিভৃত্বে কাঁদে। উপজাতীয় সন্ত্রাসীদের হিংস্র ছোবলে অত্যাচারিত নিরহ বাঙালীরা আজ নিজ দেশে পরবাসীর মত দিনাতিপাত করতে হচ্ছে। তাদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড থেকে বাদ পড়েনা এতদাঞ্চলে কর্মরত সরকারী ও বেসরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। আয়ের একটা অংশ উপজাতীয় সন্ত্রাসীদের ফান্ডে জমা দিতে হয়। অন্যথায় জীবনের নিরাপত্তা নেই। যার স্পষ্ট প্রমাণ মেলে “সরকারী কর্মকর্তাদের নিকট মোবাইলে চাঁদা দাবী ও অপহরণের হুমকির পরিপ্রেক্ষিতে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নিরাপত্তা বিধানের জন্য মাননীয় উপজেলা নির্বাহী অফিসার, নানিয়ারচর উপজেলা কর্তৃক আবেদন (যাহার স্মারক নং- ৩৩৮ তারিখ-০৯/০৩/২০১৩ ইং)।’

গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বক্তারা আরও বলেন, ‘অতিরিক্তভোগী, অতিলোভী উপজাতীয় নেতারা পার্বত্যাঞ্চল থেকে বাঙালী শূন্য করার লক্ষ্যে বাঙালীদের উপর বিভিন্নভাবে নির্যাতন সহ ‘আদিবাসী’ ষড়যন্ত্র, পার্বত্য ভূমি কমিশন আইন সংশোধনের দাবী, পুলিশ প্রশাসন উপজাতীয়করণের দাবী, উপজাতীয় সন্ত্রাসী কর্তৃক সরকারী ভূমি দখল, আন্তর্জাতিক দাতাগোষ্ঠীর মাধ্যমে সরকারের উপর চাপ প্রয়োগ করা, দেশের বিরুদ্ধে বিদেশের মাটিতে সাংবাদিক সম্মেলন, পার্বত্যাঞ্চলে বাঙালীদের ভূমি ক্রয় ও বসতি স্থাপনে উপজাতীয় নেতাদের আপত্তি ইত্যাদির মাধ্যমে পার্বত্যাঞ্চলকে নিয়ে তাদের কল্পিত “স্বাধীন জুমল্যান্ড” বানানোর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে । সে লক্ষ্যে পার্বত্যাঞ্চলে টঘউচ, ঈঐঞ কমিশন সহ কতিপয় এনজিও সংস্থাগুলি উন্নয়নের নামে ষড়যন্ত্রমূলক কার্যক্রম এবং আত্মবিক্রিত, নব্য রাজাকার রাশেদ খান মেনন, সুলতানা কামাল, মেসবাহ কামাল, মতিউর রহমান সহ কতিপয় রাজনীতিবিদ, কলামিস্ট পার্বত্য চট্টগ্রামের শান্তি বিনষ্টের লক্ষ্যে উস্কানিমূলক মিথ্যাচার চালাচ্ছে।’

রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশের অখণ্ডতা রক্ষার্থে বাংলাদেশ সংবিধানের প্রচলিত আইনে পার্বত্য ভূমি সমস্যার সমাধান, দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারীদেরকে বিচারের আওতায় আনা, পার্বত্য বাঙালীদের সাংবিধানিক অধিকার নিশ্চিতকরণ, পার্বত্যাঞ্চলে সেনাক্যম্প পুনঃস্থাপনপূর্বক চিরুণী অভিযানের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বক্তাগণ সরকারের প্রতি উদাত্ত আহবান জানান।

অন্যথায় পার্বত্যাঞ্চলে সন্ত্রাস নির্মূল, দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারীদেরকে প্রতিহত করার লক্ষ্যে পার্বত্য বাঙালীদের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে হরতালসহ কঠোর কর্মসূচী দিতে বাধ্য হবে। ফলে কোন অপ্রীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে সরকারকেই দায় দায়িত্ব বহন করতে হবে বলে হুশিয়ারি দেন বক্তারা।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন