বান্দরবানের পাহাড়ে কঠোর ব্যবস্থার ইঙ্গিত কিন্তু অভিযান কি সহজ হবে

fec-image

বাংলাদেশের পার্বত্য জেলা বান্দরবানের রুমা ও থানচিতে ব্যাংকে হামলা ও ডাকাতির ঘটনায় সশস্ত্র সংগঠন কেএনএফ- এর বিরুদ্ধে আরও কঠোর হওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান । তবে ভেরিফায়েড নয় এমন একটি ফেসবুক পাতায় কেএনএফ তাদের প্রতিক্রিয়ায় বলেছে ‘সামরিক উপায়ে সমাধানের চেষ্টা রাষ্ট্রের উচিত হয়নি’।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান শনিবার রুমায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বলেছেন,”নিরাপত্তা বাহিনী এখন যা করা দরকার সেটাই করবে। [ব্যাংক ডাকাতিতে] কারা জড়িত ও কারা সহযোগিতা করেছে তা বের করা হবে”।

মঙ্গল ও বুধবারের ঘটনার পর থেকেই নিরাপত্তা বাহিনী অভিযানের কথা বলে আসছে। কিন্তু অপহৃত ব্যাংক কর্মকর্তাকে উদ্ধার করা গেলেও লুট হওয়া অস্ত্র গত তিনদিনেও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।

এর আগে বুধবার দুপুরে থানচির ঘটনার পরপর ঢাকায় এক প্রেস ব্রিফিংয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান রুমা ও থানচির ঘটনার জন্য কেএনএফকে দায়ী করেন। যদিও তখন কেএনএফ এর দিক থেকে এ নিয়ে কোন প্রতিক্রিয়া আসেনি।

শুক্রবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে কেএনএফ এর দিক থেকে তাদের মিডিয়া ও ইন্টেলিজেন্স উইং এর পক্ষ থেকে একটি বিবৃতি তাদের ফেসবুক পাতায় প্রকাশ করা হয়। যদিও এই ফেসবুক পাতাটি ভেরিফায়েড নয়, তবে কেএনএফের অনেক বক্তব্য ও বিবৃতি সেখানে নিয়মিতভাবে প্রকাশ করা হয়।

ওই বিবৃতিতে কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট বা কেএনএফ বান্দরবানে শান্তি আলোচনার শর্ত লঙ্ঘনের অভিযোগ এনেছে সরকারের বিরুদ্ধে। তবে এই ফেসবুক পাতা এবং তাতে কেএনএফ এর বিবৃতি সম্পর্কে বিবিসি কোন নিরপেক্ষ সূত্র থেকে সত্যতা যাচাই করতে পারেনি।

তবে ‘শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির’ মুখপাত্র কাঞ্চন জয় তঞ্চঙ্গ্যা বিবিসি বাংলাকে বলেছেন আলোচনার শর্ত লঙ্ঘনের মতো কিছুই ঘটেনি। তিনি বলেছেন, শান্তি বৈঠকে যেসব আলোচনা হয়েছে, সেগুলো বাস্তবায়নের জন্য সময় দেয়নি কেএনএফে।

প্রসঙ্গত, এলিট ফোর্স র‍্যাব শুক্রবারই জানিয়েছে যে কেএনএফ এর বিরুদ্ধে সেনাবাহিনী, বিজিবি ও পুলিশ সমন্বিত সাঁড়াশি অভিযান শুরু করবে। এর আগে ২০২২ সালের শেষ দিকে পাহাড় এলাকায় কেএনএফ এর বিরুদ্ধে ব্যাপক অভিযান চালিয়েছিলো র‍্যাব।

নিরাপত্তা বিশ্লেষক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) শামীম কামাল বলছেন, তার মনে হচ্ছে অনেক দিন প্রস্তুতি নিয়েই গেরিলা হামলা শুরু করেছে কেএনএফ এবং সে কারণেই এ ধরনের হামলা অব্যাহত রাখার চেষ্টা হতে পারে।

“পাহাড়ে অভিযান চালানো খুব একটা সহজ নয়। অভিযানে সফলতা কতটা আসবে তা নিয়েও সংশয় আছে কারণ কেএনএফ হিট অ্যান্ড রান কৌশল নিয়েছে। আবার হুট করে তাদের সাথে শান্তি আলোচনাও বাতিল করা ঠিক হয়নি। সবমিলিয়ে অস্বাভাবিক অবস্থা তৈরি করা হলো, যার সমাধান কঠিন,” বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন তিনি।

মি. কামাল পাহাড়ি শান্তি চুক্তি নিয়ে গবেষণা করেছেন এবং কর্মজীবনে সেনা কর্মকর্তা হিসেবে পার্বত্য অঞ্চলে দুই দফা কাজ করেছেন।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: বান্দরবান
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন