দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন

বান্দরবানে নৌকার একক প্রার্থী বীর বাহাদুর, সপ্তম বারের মতো জয়ের স্বপ্ন দেখছেন নেতাকর্মীরা

fec-image

ঘনিয়ে আসছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন ক্ষণ। চলমান রাজনৈতিক সংকট নিরসনসহ দেশের সার্বিক পরিস্থিতি ঠিক থাকলে ২০২৪ সালের জানুয়ারির প্রথম দিকে অনুষ্ঠিত হবে সংসদ নির্বাচন। ইতোমধ্যে এমন আভাস দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের সর্বশেষ সংসদীয় (৩০০) নং আসন বান্দরবান। ৭ উপজেলার ৩৩টি ইউনিয়ন ও ২টি পৌরসভা নিয়ে গঠিত সংসদীয় এই আসন। বান্দরবান আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৫০ হাজার। গত ২৭ মে বান্দরবান জেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় বান্দরবান আসন থেকে ছয় বার নির্বাচিত সংসদ সদস্য এবং বর্তমান পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিংকে দলীয় একক প্রার্থী ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় দপ্তরে নাম প্রস্তাব করে পাঠানো হয়েছে।

১৯৯১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি, জাতীয় পার্টি ও জামায়াতের অংশগ্রহণে একটি প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী বীর বাহাদুর উশৈসিং বিজয় লাভ করেন। ছাত্র জীবনে ভালো ফুটবল খেলোয়াড় এবং পরে রেফারি তারপর খেলার মাঠ থেকে জাতীয় সংসদে। সেই থেকে তাকে আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি। প্রতিমন্ত্রী, মন্ত্রী সবই হয়েছেন। এখনও পার্বত্য ”ট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে আছেন।

১৯৯৬ সালের সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বীর বাহাদুরের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামেন বিএনপির প্রার্থী সাচিং প্রু জেরী। এই নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থীকে হারিয়ে জয় লাভ করেন তিনি। ২০০১ সালে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থীর সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন বিএনপির কেন্দ্রীয় উপজাতীয় ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক মাম্যাচিং। সেই নির্বাচনে বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী হিসাবে বিএনপি নেতা সাচিং প্রু জেরীও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এই নির্বাচনে মাত্র ৮৫৩ ভোট বেশি পেয়ে আওয়ামী লীগের বীর বাহাদুর জয় লাভ করেন। পক্ষান্তরে বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী সাচিং প্রু জেরী ভোট পেয়েছিলেন প্রায় ১৪ হাজার। ২০০৮ সালের নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থীকে বিপুল ভোটে হারিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন বীর বাহাদুর। ২০১৪ সালের সংসদ নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেয়নি। এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে দলের বহিষ্কৃত সাবেক সভাপতি প্রসন্ন কান্তি তংচঙ্গ্যা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এই নির্বাচনে প্রসন্ন কান্তি তংচঙ্গ্যাকে হারিয়ে বীর বাহাদুর জয় লাভ করেন। ২০১৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী বীর বাহাদুরের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন বিএনপি প্রার্থী সাচিং প্রু জেরী। এই নির্বাচনেও বিএনপি প্রার্থীকে হারিয়ে বীর বাহাদুর ষষ্ঠ বারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

এদিকে বীর বাহাদুর উশৈসিং ছয় বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পাশাপাশি দািীত্ব পালন করেছেন জাতীয় সংসদের ভারপ্রাপ্ত স্পিকার, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী এবং বিগত ৫ বছর ধরে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি একাধারে দলীয় ও সরকারের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ে দায়িত্ব পালনের সুবাদে নিজ সংসদীয় আসন বান্দরবান ছাড়াও রাঙ্গামাটি এবং খাগড়াছড়ি জেলায়ও যোগাযোগ, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, কৃষি, কর্মসংস্থান, অবকাঠামোসহ ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত করেছেন। দলীয় নেতাকর্মীদের ভাষায়, দল মত নির্বিশেষে সকলের আস্থার ঠিকানা এবং মডেল পার্বত্য এলাকা ও উন্নয়নের কারিগর বীর বাহাদুর। এই উন্নয়নের কারিগরকে সপ্তম বারের মতো সংসদে পাঠাতে চান নেতাকর্মীরা।

এ ব্যাপারে বান্দরবান জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক লক্ষী পদ দাস জানান, বীর বাহাদুর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একজন বিশ্বস্ত কর্মী। ১৯৯১ সাল থেকে বান্দরবানের সকল ধর্ম ও বর্ণের মানুষের একমাত্র আস্থার ঠিকানা বীর বাহাদুর। বীর বাহাদুরের হাত ধরে বান্দরবানসহ তিন পার্বত্য জেলায় অভূতপূর্ব উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। যা পার্বত্য এলাকার মানুষ এর আগে কল্পনাও করতে পারেনি। তাই বান্দরবানে উন্নয়ন ও অগ্রগতির জন্য বীর বাহাদুরের বিকল্প নেই।

বান্দরবানের উন্নয়ন ও জনগণের পাশে থাকার মতো বীর বাহাদুরের চেয়ে যোগ্য কোনো নেতা বা প্রার্থী নেই দাবি করে তিনি জানান, চাহিদার চেয়ে ব্যাপক উন্নয়নের কারণে বান্দরবানের জনসাধারণ ছয় বার বীর বাহাদুরকে বিপুল ভোটে বিজয়ী করে সংসদে পাঠিয়েছে। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে বান্দরবানের জনগণ আবারো বিপুল ভোটে বীর বাহাদুরকে বিজয়ী করে ৭ম বারের মতো সংসদে পাঠাবে। তিনি আরো বলেন, বীর বাহাদুরের নেতৃত্বে বান্দরবান জেলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ এবং অনেক শক্তিশালী। বীর বাহাদুরের নেতৃত্বে বান্দরবানে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা নির্বাচনের জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন