সিকিমে আকস্মিক বন্যা, ২৩ ভারতীয় সেনা নিখোঁজ

fec-image

ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য সিকিমে প্রবল বৃষ্টিপাত থেকে সৃষ্ট আকস্মিক বন্যায় ২৩ জন সেনা সদস্য নিখোঁজ হয়েছেন। সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তাদের খুঁজে বের করার জন্য ব্যাপক তল্লাশি চলছে। ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি বুধবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

সেনাবাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ড জানিয়েছে, লাচেন উপত্যকার কিছু স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। চুংথাং বাঁধ থেকে পানি ছাড়ার ফলে হঠাৎ করে পানির স্তর ১৫ থেকে ২০ ফুট উঁচুতে প্লাবিত হয়। এর ফলে সিংটামের কাছে বারদাংয়ে সেনা ছাউনিতে পার্ক করা সেনাবাহিনীর গাড়িগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ২৩ জন সেনা সদস্য নিখোঁজ এবং কিছু যানবাহন পানির নিচে ডুবে গেছে। উদ্ধার অভিযান চলছে।

সিকিমে মঙ্গলবার রাতভর ভারী বৃষ্টি হয়েছে। ব্যাপক বর্ষণে উত্তর সিকিমের লোনাক হ্রদ উপচে পড়ে। এতে অতিরিক্ত পানি তিস্তা নদীতে চলে আসায় হঠাৎ পানির স্তর বেড়ে যায়। তিস্তা নদী সিকিম ও পশ্চিমবঙ্গের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে।

হঠাৎ বন্যার ঘটনায় সিকিম প্রশাসন সেখানকার বাসিন্দাদের জন্য উচ্চ সতর্কতা জারি করেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্থানীয় বাসিন্দাদের শেয়ার করা ভিডিওতে দেখা যায়, পানিতে ভেসে গেছে সড়ক। নদীতে জলোচ্ছ্বাসের মতো অবস্থা।

মুখ্যমন্ত্রী প্রেম সিং তামাং ক্ষতিগ্রস্ত একটি এলাকা পরিদর্শনের সময় বলেন, বন্যায় কেউ আহত হয়নি, তবে সরকারি সম্পত্তির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সিংটামে কিছু লোক নিখোঁজ হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ত্রাণ তৎপরতা চলছে।

ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, সিকিমের চুংথাং হ্রদ উপচেপড়ায় তিস্তা নদীতে পানি বেড়েছে। গাজলডোবা, দোমোহনী, মেখলীগঞ্জ ও ঘিশের মতো নিচু এলাকাগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এসব এলাকার মানুষদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়।

সংবাদ প্রতিবেদক জানায়, আকস্মিক বন্যায় পাহাড়ি গ্রামগুলোতে হু হু করে পানি ঢুকে পড়েছে। পানির স্তর দোতলা বাড়ির সমান বেড়ে গেছে। তিস্তা নদীর পানিতে তলিয়ে যায় সেনাবাহিনীর ৪১টি গাড়ি। নিখোঁজ সেনা সদস্যরা ভেসে গেছে নাকি পাহাড়ের খাদে পড়েছে তা জানা যায়নি। এরই মধ্যে আবার ধস নামতে শুরু হয়েছে।

এদিকে জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের ড্যাম ভেঙে যাওয়ায় জলপাইগুড়ির তিস্তায় দুই কূল ছাপিয়ে বন্যার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের সমতলে। বিপদ এড়াতে নদী পাড়ের বাসিন্দাদের নিরাপদ জায়গায় সরানো হয়েছে। বুধবার সকাল ৯টায় গজলডোবা তিস্তা ব্যারেজ থেকে ২ লাখ ৫১ হাজার ৫৩৫ কিউসেক পানি ছাড়া হয়েছে যা এখন পর্যন্ত এ বছরের সর্বোচ্চ।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: বন্যা, ভারত, সিকিম
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন