রামুতে শিক্ষক কর্তৃক ছাত্রী নির্যাতন, দেড় মাসেও হয়নি সুরাহা!
কক্সবাজার উখিয়ার পাশ্ববর্তী রামু উপজেলা খুনিয়া পালং ইউনিয়নের পেঁচারদ্বীপ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক কর্তৃক তৃতীয় শ্রেণির এক স্কুল ছাত্রী নির্যাতনের দেড় মাস অতিবাহিত হয়ে গেলেও কোন বিচার না পাওয়ায় বিদ্যালয়ে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে নির্যাতনের শিকার ওই ছাত্রী। এমনটি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী ছাত্রীর পিতা ছৈয়দ হোসেন কালু। এনিয়ে স্থানীয় অভিভাবকদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
সরজমিন রামুর পেঁচারদ্বীপ এলাকা ঘুরে জানা যায়, গত ১২ জুন প্রতিদিনের ন্যায় বিদ্যালয় যান ছৈয়দ হোসেন এর স্কুল পড়ুয়া মেয়ে শারমিন আক্তার। বেলা ১১টা ৩০দিকে প্রথম শিফটের ছাত্র/ছাত্রীদের স্কুল ছুটির সময় ক্লাস রুমের পাশে দাড়িয়ে থাকতে দেখে কোন কারণ ছাড়া শারমিনকে মারধর এবং এক পর্যায়ে স্কুলের দেওয়ালের সাথে ধাক্কা দিয়ে মাথায় আঘাত করে সহকারী শিক্ষক খুরশিদা আক্তার।
আহত স্কুল ছাত্রীর পিতা ছৈয়দ হোসন কালু অভিযোগ করে বলেন, মাথায় আঘাত পাওয়ার পর মেয়েকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করি এবং ঘটনা সম্পর্কে প্রধান শিক্ষককে অবহিত করতে গেলে তিনি উল্টো হুমকি-ধামকিসহ ভর্তি বাতিল করবে বলে হুশিয়ারি দিয়ে আমাকে তাড়িয়ে দেয়। আমি বিষয়টি সম্পর্কে রামু শিক্ষা অফিসারসহ বিভিন্ন স্থানে লিখিত অভিযোগ করি, কিন্তু দীর্ঘ দেড় মাস অতিবাহিত হয়ে গেলেও আমি গরীব অসহায় বলে এর বিচার পায়নি। এখন আমাকে ওই শিক্ষককেরা হুমকি-ধামকি দিচ্ছে যার কারণে আমার মেয়ে স্কুলে পাঠাতে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতেছি। সে কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার মেয়ের শিক্ষা জীবন এখন অনিশ্চিত।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ছৈয়দ হোসেন বলেন, শিক্ষক কর্তৃক ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনায় আমরা নিজেরাও হতাশ। উভয়পক্ষকে নিয়ে ঘটনাটি মিমাংসা করার জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে।
রামু সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার আবু শামীম বলেন, ‘ঘটনার পরপরই আমি বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়ে শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীর বক্তব্য গ্রহণ করে শিক্ষা অফিসারকে নিকট দাখিল করেছি। এখন ব্যবস্থা নেওয়ার দায়িত্ব শিক্ষা অফিসারের।’
রামু উপজেলা শিক্ষা অফিসার গৌর চন্দ্র দে’র নিকট এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ঘটনাটি সম্পর্কে তদন্ত করে রিপোর্ট দেওয়ার জন্য সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. শামীমকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। তিনি এখনো লিখিত প্রতিবেদন উপস্থাপন করেনি। যদি প্রতিবেদনটি পাওয়া যায়, তাহলে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট পাঠানো হবে। তবে তার আগে আমিও একটু ঘটনাটি সম্পর্কে জানার জন্য স্কুল পরিদর্শন করবো।’
এ বিষয়ে জেলা শিক্ষা অফিসার মো. আসাদুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজ খবর নিয়ে শিক্ষা অফিসারের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য যে, গত দেড় মাস পূর্বে উক্ত ঘটনার জের ধরে স্থানীয় অভিভাবক, ভুক্তভোগী পরিবার এক মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছিল। এরপর শিক্ষা অফিসের টনক নড়লেও রহস্যজনক কারণে কোন ব্যবস্থা নেয়নি শিক্ষা অফিসার।