মানিকছড়ি'র অবহেলিত জনপদ

১৫০০ টাকা বেতনে  এক দশক ধরে শিক্ষার আলো ছড়াচ্ছেন ৪ শিক্ষক!

fec-image

খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি উপজেলার অনগ্রসর জনপদ দক্ষিণ হাফছড়ি এলাকায় গ্রামবাসীর উদ্যোগে গড়ে উঠা বিদ্যাপীঠে গত এক দশক ধরে নিরবে নিভৃত পাঠদান চললেও সুনজর পড়েনি কারও। গত এক দশক ধরে মাসে ১৫০০ টাকায় শিক্ষকতা করছেন ৪ যুবক!

উপজেলা সদর থেকে ৬ কিলোমিটার নির্জন এ গ্রামের আশেপাশে কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নেই। যাতায়াতে রাস্তা-ঘাটও দুর্গম! ফলে অন্ধকার জনপদে শিক্ষার আলো ছড়ানোর দুঃস্বপ্ন নিয়ে ২০১২ সালে গ্রামবাসীর সহায়তায় শণ, বাঁশ ও খুঁটিতে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত। কালের আবর্তে উপজেলার সকল স্কুল, মাদরাসায় আধুনিকতার স্পর্শ হলেও কেবলই নির্গিত থেকে গেল ‘ দক্ষিণ হাফছড়ি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি’।

গত ১৮ জানুয়ারি  বুধবার বিদ্যালয় পরিদর্শন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রক্তিম চৌধুরী। এ সময় তিনি শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের আন্তরিকতা ও সন্তোষজনক পাঠদান প্রত্যক্ষ করলেও প্রতিষ্ঠানের উন্নতি না হওয়ায় বিষয় খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন।

এ সময় প্রধান শিক্ষক সুইচিংপ্রু মারমা জানান, ২০১২ সালে অনগ্রসর জনপদ মনাধন পাড়া, বক্রিপাড়া ও দক্ষিণ হাফছড়ি এলাকার দেড়শতাধিক ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ছেলে-মেয়েদের নিয়ে স্কুলটি প্রতিষ্ঠিত হলেও প্রশাসন কিংবা জনপ্রতিনিধিদের সুনজর না থাকায় এই বিদ্যাপীঠ এখন নিভু নিভু অবস্থা!

বর্তমানে ৪ জন শিক্ষক ও ১১৪ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। এলাকার হতদরিদ্র অভিভাবকের মুষ্টি চাল, খয়রাতি দান-অনুদানে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী পরিবারে শিক্ষার আলো ফুটাতে আমাদের ক্ষুদ্রতম এ চেষ্টা। মাসিক ১৫০০ টাকা বেতন। এটা অমানবিক!

স্কুলের নামে ৩৩ শতক ভূমি বন্দোবস্তের আবেদন করেছি। জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে জায়গা বন্দোবস্তী বাবদ ৫ লাখ টাকা সরকারী ফান্ডে জমা দেওয়ার চিঠি পেয়েছি!  কিন্তু এত টাকা জোগাড় করা আদৌ সম্ভব না।  বিষয়টি ইউএনও মহোদয়কে জানিয়েছি।

পরে ইউএনও রক্তিম চৌধুরী শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষা উপকরণ ফুটবল ও কিছু শিক্ষামূলক বই বিতরণ করেন।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রক্তিম চৌধুরী বলেন, উপজেলার অনগ্রসর জনপদে এলাকাবাসীর উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত বিদ্যালয়টির দুরাবস্থার বিষয়ে খোঁজ-খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: মানিকছড়ি
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন