আলীকদমে অনুমোদন না থাকলেও নির্বিচারে চলছে পাথর উত্তোলন

নিজস্ব প্রতিনিধি:

বান্দরবানের আলীকদমে সরকারি অনুমোদনের তোয়াক্কা না করে নির্বিচারে চলছে পাথর উত্তোলন। বিশেষ করে এসব পাথর চৈক্ষ্যং ইউনিয়নের বিভিন্ন ঝিরি ও পাহাড়ের পাদদেশ থেকে তোলা হচ্ছে। অধিকাংশ ঝিরি ও ঝিরির শাখা প্রশাখা পাথর শুণ্য হয়ে পড়ায় ঝিরিগুলোতে পানি শূণ্যতা দেখা দিয়েছে। হুমকির মুখে পড়ছে পাহাড়গুলো।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার বড় ভরিমূখ, ছোট ভরির মুখ, মাংগর ঝিরি, কলারঝিরি থেকে নির্বিচারে পাথর উত্তোলন করছে ২৫-৩০ জন শ্রমিক। বাঘেরঝিরি ও ভরিমূখ রাস্তার পাশে পুরানো পাথরের পাশাপাশি সদ্য উত্তোলনকৃত পাথরও স্তুপ দেখা যায়।

উত্তোলনের পর এসব পাথর গাড়ীতে করে কলারঝিরি হয়ে নয়াপাড়ায় নিয়ে মেশিন দিয়ে ভেঙ্গে ছোট করা হয়।

এসব কাজে নিয়োজিত শ্রমিদের সাথে কথা বললে জানা যায়, তারা জীবিকার তাগিদে টাকার জন্য জীবন ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছে।

এলাকাবাসী জানান, র্দীঘদিন ধরে পাথর উত্তোলন করা হলেও সংশিষ্ট প্রশাসন অদৃশ্য কারনে নিরব রয়েছে। প্রশাসনের নিরবতার কারনে স্থানীয়রাও বাধা দিতে সাহস পাচ্ছেন না। সাহস করে কেউ বাধা দিলেও  জনসম্মূখে তাদের নানা হুমকির সম্মুখীন হতে হয়।

সুরেশ পাড়ার বাসিন্দা দিবিয় মণি তংচক্সগ্যা বলেন, আমরা পাথর উত্তোলনকারীদের ক্ষমতার কাছে অসহায়। আমাদের বসতভিটার পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া বড় ভরিমুখ ঝিরিটি এক বছর আগেও পাথরের ভর্তি থাকলেও বর্তমানে কোন পাথর নেই। আমাদের গোসল করতে হলে পাড়া থেকে এক কিলোমিটার দুরে গিয়ে গোসল করতে হয় অল্প পানিতে।

জানা গেছে, পাথর উত্তোলনে কোন অনুমতি না থাকলেও পুরনো অনুমতিপত্র নিয়ে অনেকে দিব্যি ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। এ ক্ষেত্রে কৌশলী পাথর দস্যুরা পূর্বের পারমিটের পাথর নানা কারনে পরিবহণ করতে পারেনি বলে প্রশাসনকে ধোকা দিয়ে থাকেন। এই পদ্ধিতিতে পুরো মৌসুম জুড়ে অবৈধভাবে পাহাড়ের পাথর লুটের কার্যক্রম শেষ করে পাথর দস্যুরা।

এই প্রসঙ্গে আলীকদম উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. নাজিমুল হায়দার জানান, পাথর উত্তোলনের স্থানগুলোতে আমরা অভিযানে গিয়েছিলাম। সেখানে পাথরের স্তুপ থাকলেও পাথর উত্তোলনকারী কাউকে পাওয়া যায়নি। কিছুদিন পূর্বেও পাথর উত্তোলনের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে দুই শ্রমিককে জরিমানা করা হয়েছে। অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন