আলীকদমে ছড়িয়ে পড়ছে গরুর লাম্পি স্কিন রোগ
বান্দরবানের আলীকদমের সদর গ্রামাঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে গরুর লাম্পি স্কিন রোগ (এলএসডি)। গত এক মাসে এ রোগে আক্রান্ত হয়েছে প্রায় ৬৮০টি গরু। এর মধ্যে মারা গেছে ৩টি। এ রোগের প্রতিষেধক ও সঠিক ওষুধ না থাকায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন গরুর মালিকরা।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা বলছেন, এটি ভাইরাসজনিত একটি রোগ। মশা-মাছি ও কীটপতঙ্গের মাধ্যমে গরুর শরীরের ছড়িয়ে পড়ে। গরুর গোয়ালের চারপাশ পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ৪টি ইউনিয়নে ইতোমধ্যে প্রায় ৬৮০টি গরুর এলএসডি’র চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এর বাইরেও এলএসডি আক্রান্ত গরু থাকতে পারে। এ পর্যন্ত ৩টি গরুর বাচুর এ রোগে মারা গেছে।
বৃহস্পতিবার(২৮ মে) উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে গরুর গরুর মালিকদের সঙ্গে কথা হয়।
উপজেলা সদরের গরুর মালিক ছাবের আহামদ জানান, গত মাসখানেক আগে তার গাভীর গর্দানে একটি ফোস্কার মতো উঠে। পরে সেটির চামড়া উঠে গিয়ে গর্তের সৃষ্টি হয়। খাওয়া বন্ধ করে দেয় গাভিটি। স্থানীয় ফার্মেসী থেকে ওষুধ কিনে খাওয়ানোর পর গাভিটি সুস্থ হয়।
ছাবের আহামদ আরো বলেন, দু’সপ্তাহ আগে থেকে চারমাস বয়সী বাচুরের সারা শরীরে ফোস্কার মতো উঠে। বাচুরটি দুধ খাওয়া বন্ধ করে দেয়। পরে প্রাণীসম্পদ অফিসে নিয়ে গেলে জানা যায়, এ রোগের নাম এলএসডি। বর্তমানে চিকিৎসকের পরামর্শ মতো ইনজেকশান প্রয়োগ করায় বাচুরটি সুস্থ হয়ে উঠছে।
চিকিৎসকেরা বলছেন, মশা-মাছি ও পোকার মাধ্যমে ছড়ায় লাম্পি স্কিন রোগ। এ রোগে আক্রান্ত গরুর শরীরের তাপমাত্রা ১০৩-১০৫ ডিগ্রিতে বেড়ে দাঁড়ায়। গরু খাওয়া বন্ধ করে দেয়। শরীরে প্রচণ্ড জ্বর আসে। পাশাপাশি গরুর শরীরের বসন্তের মতো গুটি গুটি চাকা দেখা দেয়। পরে সেখান থেকে পুঁজ জমে ফেটে গিয়ে মাংস খসে পড়ে। ফলে দুধ উৎপাদনও কমে যায়।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের চিকিৎসক ডা. রূপম চন্দ্র মহন্ত বলেন, ‘এ রোগটি শুধু আলীকদমে নয়, সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। এ রোগের টিকা আমাদের দেশে নেই। আক্রান্ত গরুকে মশা-মাছি থেকে দূরে রাখতে হবে। তবে চিকিৎসা নিলে এ রোগ ভালো হয়ে যায়।’