বিতর্কিত আ.লীগ নেতাকে আজীবন বহিষ্কারের সুপারিশ

fec-image

রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলা আওয়ামীলীগের শাখার প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক এবং আমতলী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান রাসেল চৌধুরীকে বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের জন্য দলীয় সকল কার্যক্রম থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কারের সুপারিশ করা হয়েছে।

এই লক্ষে মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) দলীয় কার্যালয়ে এক জরুরি সভার আয়োজন করা হয়। সভায় আওয়ামীলীগ ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের পক্ষ থেকে জেলা আওয়ামীলীগ বরাবরে রেজুলেশন করে বহিষ্কারের সুপারিশ করা হয়েছে।

বুধবার (১ নভেম্বর) বিকেল ৫টায় দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেন বাঘাইছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আলী হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক গিয়াসউদ্দিন মামুন ।

এসময় উপজেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আলী হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন মামুন লিখিত বক্তব্যের মাধ্যমে গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে তুলে ধরেন।

লিখিত বক্তব্যে গিয়াস উদ্দিন মামুন বলেন, বাঘাইছড়ি উপজেলা আওয়ামীলীগের প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক রাসেল চৌধুরী, আমতলী ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি বিল্লাল হোসেন ও আমতলী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি পারভেজ হোসেনের বিরুদ্ধে আমতলী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের অভিযোগ ও বিভিন্ন অপকর্ম এবং সংগঠনের শৃঙ্খলা ভঙ্গসহ নানান অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে সংগঠন হতে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের লক্ষে গত ১৩ অক্টোবর রাঙ্গামাটি জেলা আওয়ামীলীগের সাথে এক মতবিনিময় সভা করে বাঘাইছড়ি উপজেলা ও আমতলী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের দেড়শতাধিক নেতাকর্মী।

তিনি আরো বলেন, রাঙ্গামাটি জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি দীপংকর তালুকদার এমপি ও সাধারণ সম্পাদক মুছা মাতব্বরসহ সিনিয়র নেতৃবৃন্দ অভিযোগ আমলে নিয়ে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস প্রদান করেন। তারই ধারাবাহিকতায় বাঘাইছড়ি উপজেলা আওয়ামীলীগের দলীয় কার্যালয়ে স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ছাত্রলীহসহ উপজেলার সিনিয়র নেতৃবৃন্দের অংশগ্রহণে গতকাল ৩১ অক্টোবর এক জরুরি সভা করে বাঘাইছড়ি উপজেলা আওয়ামীলীগ। সভায় সকলের সম্মতিক্রমে রাসেল চৌধুরী, বিল্লাল হোসেন ও পারভেজকে স্থায়ী বহিষ্কারের জন্য জেলা আওয়ামীলীগ বরাবর সুপারিশ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।

রাসেল চৌধুরীর বিষয়ে কি কি অভিযোগ প্রশ্নের উত্তরে গিয়াস উদ্দিন মামুন বলেন, রাসেল চৌধুরী সংগঠনের পদ পদবী ব্যবহার করে দলীয় অনেক নেতাকর্মীকে মামলা হামলা হয়রানি ও চাঁদাবাজী করেছে এমন অনেক অভিযোগ আছে। দলের সিনিয়র নেতাকর্মী বিশেষ করে উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন মামুন ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অংসুইপ্রু চৌধুরীসহ অনেকের সিল-সই এবং দলীয় প্যাড নকল করে ব্যবহার করেছে।

গিয়াস উদ্দিন মামুন আরো বলেন আওয়ামীলীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে যেকোন পর্যায়ের নেতাকে বহিষ্কার করার এখতিয়ার রাখে সিনিয়র কমিটি।

উপজেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আলী হোসেন বলেন, গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকা প্রতিকে নির্বাচন করে জামানত বাজেয়াপ্ত হয় রাসেল চৌধুরীর। আমতলী ইউনিয়নে তার অপকর্মের কারণে আমতলী ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের ভোট নষ্ট হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, আগামীকাল উপজেলা আওয়ামীলীগের সিদ্ধান্তের কপি জেলা আওয়ামীলীগ বরাবর প্রেরণ করা হবে আশা করছি। জেলা আওয়ামীলীগ দ্রুত ভালো একটি সিদ্ধান্ত নিবে।

এ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক অভিযুক্ত রাসেল চৌধুরীর কাছে তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কতিপয় নামধারী আওয়ামীলীগ নেতা ও কাঠ পাচারকারী চক্র সংঘবদ্ধভাবে মিথ্যা অভিযোগ করেছে। তদন্ত সাপেক্ষে অভিযোগ প্রমাণিত হলে জেলা আওয়ামীলীগ যেই সিদ্ধান্ত নেবে সেটি আমি মাথা পেতে নেব। এছাড়া জেলার সিনিয়র নেতাদের সাথে কথা বলে বিস্তারিত তুলে ধরে সংবাদ সম্মেলন করবো।

উল্লেখ্য, যে এর আগেও ২০১৭ সালে আমতলী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি পদ হতে সাময়িক অব্যাহতি দেয়া হয় রাসেল চৌধুরীকে।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: আ.লী‌গ, বহিষ্কার
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন