আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে পার্বত্য চুক্তি পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নে সরকারকে বাধ্য করা হবে- সন্তু লারমা
রাঙামাটিতে পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের ২৫ বছর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে রজত জয়ন্তী উৎসব ও ১৯ তম কাউন্সিল
স্টাফ রিপোর্টার, রাঙামাটি:
আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তি পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নে সরকারকে বাধ্য করা হবে বলে হুঁশিয়ারী দিয়েছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ চেয়ারম্যান ও পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি সভাপতি জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা ওরফে সন্তু লারমা।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরের পর বর্তমান আওয়ামীলীগ বিভিন্ন ভাবে নয় বছর ক্ষমতায় ছিল। কিন্তু বর্তমান সরকার নয় বছর ক্ষমতায় থাকার পরও পার্বত্য চুক্তির ৯টি বিষয় বাস্তবায়ন করেনি । দীর্ঘ ১৭ বছরেও চুক্তির মৌলিক বিষয়গুলো বাস্তবায়ন করা হয়নি। পার্বত্য চুক্তির মৌলিক বিষয়গুলো বাস্তবায়ন না হলে পার্বত্যাঞ্চলের বিরাজমান সমস্যা সমাধান হবে না । বরং পাহাড় আরো অশান্ত হয়ে উঠবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় রাঙামাটি জিমনেসিয়াম চত্বরে আয়োজিত পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের ২৫ বছর প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী ও রজত জয়ন্তী উৎসবসহ ১৯ তম সম্মেলনে ও গনসমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে সন্তু লারমা এসব কথা বলেন। অধিবেশনের উদ্বোধন করতে গিয়ে একথা বলেন।
পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ত্রিজিনাথ চাকমার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে আরো বক্তব্য রাখেন, গণ ফোরামের প্রেসিডিয়াম সদস্য পংকজ ভট্টাচার্য্য, সংসদ সদস্য উষাতন তালুকদার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক রুবায়েত ফেরদৌস, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রেহমান নাসির উদ্দিন, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রী কমিটির সাধারন সম্পাদক জি এম জিলানি,ছাত্র মৈত্রী কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি বাপ্পা দীপ্ত বষু,পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ (পিসিপি) কেন্দ্রীয় কমিটির সংগঠনিক সম্পাদক জুয়েল চাকমা প্রমুখ।
সন্তু লারমা বলেন, জুম্ম জনগণের দীর্ঘ আন্দোলনের পর পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তি স্বাক্ষর করতে আওয়ামীলীগ সরকার বাধ্য হয়েছিল। কিন্তু শান্তিচুক্তির আলোকে ভূমি বিরোধ নিষ্পতি কমিশন আইন যথাযথভাবে প্রণীত হয়নি। পার্বত্যাঞ্চলের স্থায়ী বাসিন্দাদের নিয়ে ভোটার তালিকা করে পার্বত্য জেলা পরিষদে নির্বাচনের ব্যবস্থা করা হয়নি।
তিনি আরো বলেন, চুক্তি মোতাবেক স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা ও পুলিশ, ভূমি ব্যবস্থাপনা, পর্যটন, মাধ্যমিক শিক্ষা, জুমচাষসহ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো এখনো হস্তান্ত না করে হস্তান্তরযোগ্য ৩৩টি বিষয়ে মধ্যে কেবলমাত্র ২৩টি বিষয় হস্তান্তর করা হয়েছে। চুক্তি বাস্তবায়ন না হওয়ায় পাহাড়ের জুম্ম জনগনের মনে ক্ষোভের অগ্নিশিখা জ্বলছে। তাই পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তি বাস্তবায়নের আন্দোলনের জুম্মজাতি গোষ্ঠিগুলোকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহবান জানান সন্তু লারমা।
সমাবেশ শেষে বিশাল এক র্যালী রাঙামাটি জিমনেসিয়াম থেকে শুরু হয়ে প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে জনসংহতি সমিতির কার্যালয়ে এসে শেষ হয়।